Biography of srinivasa ramanujan in bengali
শ্রীনিবাস রামানুজন
শ্রীনিবাস রামানুজন (২২ ডিসেম্বর ১৮৮৭ – ২৬ এপ্রিল ১৯২০) অসামান্য প্রতিভাবান একজন ভারতীয় গণিতবিদ। খুব অল্প সময় বাঁচলেও তিনি গণিতে সুদূরপ্রসারী অবদান রেখে গেছেন। প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় তিনি গণিতের বিভিন্ন শাখায়, বিশেষ করে গাণিতিক বিশ্লেষণ, সংখ্যাতত্ত্ব, অসীম ধারা ও আবৃত্ত ভগ্নাংশ শাখায়, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রেখে যাওয়া নোটবুক বা ডায়েরি হতে পরবর্তীতে আরও অনেক নতুন সমাধান পাওয়া গেছে। ইংরেজ গণিতবিদ জি এইচ হার্ডি রামানুজনকে অয়েলার ও গাউসের সমপর্যায়ের গণিতবিদ মনে করেন। [১] অবিভক্ত ভারতেরমাদ্রাজের এক গরিব ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান রামানুজন ১০ বছর বয়সে গণিতের সঙ্গে পরিচিত হন। তাঁকে এস এল লোনি লিখিত ‘’’ত্রিকোণমিতি’’’ পুস্তকটি দেওয়া হয় এবং তখন থেকে তিনি গণিতে সহজাত প্রতিভা প্রদর্শন করেন। [২] ১২ বছরের মধ্যে তিনি ওই পুস্তকের বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করেন। এমন কি তিনি নিজে কিছু উপপাদ্য আবিষ্কার করেন এবং স্বতন্ত্রভাবে অয়েলারের এককত্ব পুনরাবিষ্কার করেন। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি গণিতে বিশেষ দক্ষতা দেখিয়ে পুরস্কার ও প্রশংসা লাভ করেন। ১৭ বছর বয়সে রামানুজন বার্নোলির সংখ্যা ও অয়েলার-মাসেরনি ধ্রুবকের ওপর নিজের গবেষণা সম্পন্ন করেন। কুম্বাকোটম সরকারি কলেজে পড়ার জন্য বৃত্তি পেলেও অ-গাণিতিক বিষয়ে ফেল করার কারণে তার বৃত্তি বাতিল হয়ে যায়। এরপর তিনি অন্য একটি কলেজে নিজের গাণিতিক গবেষণা শুরু করেন। এই সময় জীবন ধারণের জন্য তিনি মাদ্রাজ বন্দর ট্রাস্টের মহা হিসাবরক্ষকের কার্যালয়ে কেরানি পদে যোগ দেন।[৩]
জীবনী
[সম্পাদনা]জন্ম ও বংশপরিচয়
[সম্পাদনা]রামানুজন ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতেরমাদ্রাজ (বতমানে চেন্নাই )প্রদেশের তাঞ্জোর জেলার কাবেরী নদীর তীরে এরোড শহরে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন এরোডের মুন্সেফ কোর্টের এক আমিনের কন্যা।[৪] তার পিতা কে শ্রীনিবাস ইয়েঙ্গার ছিলেন শহরের একটি কাপড়ের দোকানের হিসাবরক্ষক। তার মা কোমালাটাম্মাল একজন গৃহিণী ছিলেন এবং একটি স্থানীয় মন্দিরে গান গাইতেন। তিনি ছিলেন তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন মহিলা। প্রচলিত আছে যে, রামানুজনের মায়ের বিয়ের পর বেশ কয়েকবছর কোন সন্তান না হওয়ায়, রামানুজনের মাতামহ নামাক্কল শহরের বিখ্যাত নামগিরি দেবীর নিকট নিজ কন্যা সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন। এরপরই জ্যেষ্ঠ সন্তান রামানুজন জন্মগ্রহণ করেন।
বাল্যকাল
[সম্পাদনা]পাঁচ বছর বয়সে রামানুজনকে পাড়ার পাঠশালায় ভর্তি করা হয়। সাত বছর বয়সে তাকে কুম্ভকোনাম শহরের টাউন হাই স্কুলে ভর্তি করানো হয়। রামানুজন সাধারণত কম কথা বলতেন এবং মনে হতো তিনি কিছুটা ধ্যানমগ্ন থাকতেন। তার অসাধারণ প্রতিভা স্কুল কর্তৃপক্ষের গোচরে আসে এবং তার প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে বৃত্তি দেওয়া হয়। তিনি বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে বিভিন্ন গাণিতিক উপপাদ্য, গণিতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। তিনি ও এর মান যে কোন সংখ্যক দশমিক স্থান পর্যন্ত বলতে পারতেন। প্রথমে নিজের এই অদ্ভুত প্রতিভার বিচার তিনি নিজেই করতে পারেননি। তার এক বন্ধু তাকে জি.
এস. কার (G S Carr)-এর লেখা সিনপসিস অফ এলিম্যনটারি রেজাল্ট ইন পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড ম্যাথেম্যাটিক্স (Synopsis chastisement elementary results in Pure dominant Applied Mathematics) বইটি পড়তে দেন। মূলত এই বইটি পড়েই তার গাণিতিক প্রতিভার বিকাশ ঘটতে শুরু করে। রামানুজন এই বইয়ে প্রদত্ত বিভিন্ন গাণিতিক সূত্রগুলির সত্যতা পরীক্ষা শুরু করেন। তার কাছে এগুলো ছিল মৌলিক গবেষণার মত, কারণ তার কাছে অন্য কোন সহায়ক গ্রন্থ ছিল না।
গবেষণা কর্মের সূচনা
[সম্পাদনা]তিনি ম্যাজিক স্কোয়ার গঠনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এরপর তিনি জ্যামিতিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর কাজ শুরু করেন। বৃত্তের বর্গসম্পর্কীয় তার গবেষণা পৃথিবীর বিষুবরৈখিক পরিধির দৈর্ঘ্য নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পদ্ধতিতে নির্ণীত বিষুবরৈখিক পরিধির দৈর্ঘ্য এবং প্রকৃত মানের পার্থক্য মাত্র কয়েক ফুট ছিল। জ্যামিতির সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে তিনি বীজগণিতের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। শোনা যায়, রামানুজন সকালে ঘুম থেকে উঠেই তার নোট বুকে কিছু লিখতেন। কী লিখছেন জিজ্ঞাসা করলে বলতেন যে, নামাক্কলের দেবী স্বপ্নে তাঁকে এই সব সূত্র দিয়ে প্রেরণা দিচ্ছেন। স্বপ্নের মাধ্যমে প্রাপ্ত এ সকল সূত্র তিনি পরীক্ষণ করতেন, যদিও তার পরীক্ষা পদ্ধতি খুব আনুষ্ঠানিক ছিলনা।
যৌবনকাল
[সম্পাদনা]১৬ বছর বয়সে রামানুজন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ও জুনিয়র শুভ্রামানায়াম বৃত্তি লাভ করে কুম্ভকোনাম সরকারি কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু গণিতের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়ার ফলে পরের পরীক্ষায় ইংরেজিতে অকৃতকার্য হন এবং তার বৃত্তি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি কুম্ভকোনাম ত্যাগ করে প্রথমে বিশাখাপত্তনম এবং পরে মাদ্রাজ যান। ১৯০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ফার্স্ট এক্সামিনেশন ইন আর্টস (F.A.
বা I.A.) পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন এবং অকৃতকার্য হন। তিনি আর এই পরীক্ষা দেননি। এরপর কয়েক বছর তিনি নিজের মত গণিত বিষয়ক গবেষণা চালিয়ে যান।
বিবাহ ও কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯০৯ সালে রামানুজন বিবাহ করেন। কিন্তু তার কোন স্থায়ী কর্মসংস্থান ছিলনা। প্রয়োজনের তাগিদেই তিনি স্বভাবের বিপরীতে জীবিকা অন্বেষণের চেষ্টা চালাতে থাকেন। এ সময় তার ঘনিষ্ঠ একজন একটি পরিচয়পত্র দিয়ে চাকুরির সুপারিশ করে তাঁকে মাদ্রাজ শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে নেলোর শহরের কালেক্টর দেওয়ান বাহাদুর রামচন্দ্র রাও-এর কাছে প্রেরণ করেন। রামচন্দ্র রাও গণিতের ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। রামানুজনের দুটি নোটবুক তার সকল গাণিতিক সূত্রের প্রতিপাদ্য ও এ-সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় লিপিবদ্ধ ছিল। রামানুজন সম্পর্কে রামচন্দ্র রাও নিজের ভাষায় বর্ণনা করেছেন। নিচে কিছুটা তুলে ধরা হলো,
“ | কয়েক বছর আগে, কোনরকম গাণিতিক বিষয়ে উৎসাহ নেই এরূপ, আমার এক ভাইপো আমাকে একদিন জানালো, তার কাছে একজন অভ্যাগত আছেন যিনি গণিত বিষয়ে কথা বলেন এবং আমার ভাইপো তার কথাবার্তা বুঝতে পারছে না। আমার ভাইপোর অনুরোধে এবং আমার গাণিতিক বিষয়র উৎসাহের কারণে আমি রামানুজনকে আমার সামনে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দিলাম। একটু বেঁটে কিন্তু বলিষ্ঠ, খোঁচা দাড়িবিশিষ্ট, সাদাসিধে চেহারার বুদ্ধিদীপ্ত চক্ষুবিশিষ্ট রামানুজন নোটবুক হাতে আমার সামনে এলেন। তার হাতে নোটবুক দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে বারবার ব্যবহারে নোটবুকের রঙ যেমন হালকা হয়েছে তেমনি বিবর্ণও হয়েছে। তিনি কুম্ভকোনাম থেকে পালিয়ে মাদ্রাজ এসেছেন বিশ্রাম নিতে এবং বিশ্রামের অবসরে তার অনুশীলন চালিয়ে যাবেন। তিনি কোন যশ বা খ্যাতি প্রার্থনা করেন না। তিনি কেবল বিশ্রাম চান, অর্থাৎ বিনা উদ্যোগে তিনি সামান্য খাদ্য চান যাতে তিনি তার স্বপ্নের সাধনা চালিয়ে যেতে পারেন। | ” |
“ | তিনি খাতা খুলে তার আবিষ্কৃত কিছু বিষয় আমার কাছে ব্যাখ্যা শুরু করলেন এবং আমি সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারলাম যে তার বক্তব্য খানিকটা গতানুগতিক ধারা বহির্ভূত; কিন্তু আমার সীমিত জ্ঞান দিয়ে আমি বুঝতে অসমর্থ হই যে তার বক্তব্য সঠিক না ভ্রান্ত। তাই কোনরূপ সিদ্ধান্ত প্রদান না করে আমি তাকে পুনরায় আসতে বলি এবং তিনি আসেন। তিনি আমার জ্ঞানের পরিধি বুঝতে পারেন এবং তিনি কিছু সহজতর বিষয় আমার নিকট ব্যাখ্যা করেন। তার ব্যাখ্যা তৎকালীন অনেক পাঠ্যপুস্তক অপেক্ষা উৎকৃষ্ট ছিল এবং তিনি যে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি এ সম্পর্কে আর কোন সন্দেহ রইলো না। অতঃপর তিনি ধাপে ধাপে উপবৃত্তিক যোগজ (elliptic intergal) এবং অধিজ্যামিতিক ধারা (Hypergeometric series) আমার নিকট ব্যাখ্যা করেন এবং সর্বশেষ তার অপসারী ধারা তত্ত্ব (Theory of noticeable series) যা এখনও জগতবাসীর নিকট অজ্ঞাত, আমাকে অভিভূত করে। আমি তার কাছে জানতে চাই, তিনি কী চান। তিনি জানান যে, কোনরকম সামান্যভাবে গ্রাসাচ্ছাদনের উপযুক্ত একটি ব্যবস্থা হলে তিনি তার গবেষণা চালিয়ে যেতে পারেন। | ” |
রামচন্দ্র রাও কিছুদিনের জন্য রামানুজনের সকল ব্যয়ভার বহন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু তার জন্য কোন বৃত্তির ব্যবস্থা না হওয়ায় এবং রামানুজন দীর্ঘকাল অপরের গলগ্রহ হয়ে থাকতে সম্মত না হওয়ায় তিনি মাদ্রাজ পোর্ট ট্রাস্টের অধীনে একটি সামান্য পদের চাকুরিতে যোগদান করেন। কিন্তু তার গবেষণা কর্ম এসবের জন্য কখনো ব্যহত হয়নি। পোর্ট ট্রাস্টে কাজ করার সময় কিছু লোকের সাথে তার পরিচয় হয় যারা তার নোটবুক নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেন। এর সূত্র ধরে গণিত বিষয়ে কিছু বিশেষজ্ঞের সাথে তার যোগাযোগ হয়। ১৯১১ সালে তার প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ Journal of the Mathematical Society পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংখ্যাতত্ত্বের উপর তার গবেষণালব্ধ Some Properties of Bernoulli's Numbers নামে তার প্রথম দীর্ঘ প্রবন্ধ একই বছর প্রকাশিত হয়। ১৯১২ সালে একই পত্রিকায় তার আরো দুটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় এবং সমাধানের জন্য কিছু প্রশ্নও প্রকাশিত হয়।
প্রতিভার স্বীকৃতি
[সম্পাদনা]রামচন্দ্র রাও মাদ্রাজ প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়ের মি.
গ্রিফিথ-কে রামানুজনের ব্যাপারে বলেন। মাদ্রাজ পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান স্যার ফ্রান্সিস স্প্রিং-এর সঙ্গে মি. গ্রিফিথ এর আলাপ হওয়ার পর থেকেই রামানুজনের প্রতিভার স্বীকৃতি শুরু হয়। মাদ্রাজ শহরের বিশিষ্ট পণ্ডিত শেশা আইয়ার এবং অন্যান্যদের পরামর্শে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের ফেলো জি.এইচ. হার্ডির সঙ্গে রামানুজন যোগাযোগ শুরু করেন এবং তার বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে ইংরেজি ভাষায় একটি পত্র লেখেন। এই পত্রের সঙ্গে ১২০ টি উপপাদ্য সংযোজিত ছিল, তার ভিতর থেকে নমুনাস্বরূপ হার্ডি ১৫টি নির্বাচন করেন। হার্ডি মন্তব্য করেন
“ | একজন সাধারণ পেশাদার গণিত বিশারদ হিসেবে একজন অপরিচিত হিন্দু কেরানির নিকট হতে পত্রপ্রাপ্তির পর আমার প্রতিক্রিয়া দিয়েই আপনার প্রতি আমার বক্তব্য শুরু করতে চাই। | ” |
এরপর হার্ডি ওই ১২০ টির মধ্যে কয়েকটি ইতিপূর্বে অন্য কোন গণিত বিশারদ প্রমাণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
“ | তবে এগুলি দেখলেই বোঝা যায় যে কেবলমাত্র একজন তীক্ষ্ম মেধাসম্পন্ন গণিতবিদের পক্ষেই এগুলো লেখা সম্ভব। এগুলো সবই সঠিক, কারণ সঠিক না হলে এগুলো আবিষ্কার মত ইচ্ছা কারুরই হত না। সবশেষে লেখক নিশ্চয়ই সৎ, কারণ খ্যাতনামা গণিতবিদ চোর বা হামবাগ অপেক্ষা অনেক সাধারণ মানুষ হয়। | ” |
“ | রামানুজনের যেমন অনেক গৌরবান্বিত সাফল্য ছিল, তেমনি মৌলিক সংখ্যাভিত্তিক তত্ত্ব ও আনুষঙ্গিক সমস্যায় ভুলও ছিল। এটা তার একটি বড় ব্যর্থতা বলে মনে করা যায়। তবুও আমি নিশ্চিত নই, কোন কোন ক্ষেত্রে তার ব্যর্থতা তার সাফল্য অপেক্ষা বিস্ময়কর বলে মনে হয়। | ” |
একটি গাণিতিক পদের জন্য ব্যবহৃত প্রতীক (notation) ১৯০৮ সালে এডমুন্ড ল্যান্ডাউ প্রথম উদ্ভাবন করেন। ল্যান্ডাউয়ের মত এত কিছু রামানুজনের ছিলনা। তিনি ফরাসী বা জার্মান ভাষায় কোন পুস্তক কখনো দেখেন নি, এমন কি ইংরেজি ভাষায় তার জ্ঞান এত দুর্বল ছিল যে কোন ডিগ্রির জন্য কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াও তার পক্ষে সম্ভব ছিলনা। তিনি এমন কিছু বিষয় ও সমস্যার উপস্থাপনা করেছেন যা ইউরোপের অসামান্য প্রতিভাধর বিজ্ঞানীরা ১০০ বছর ধরে সমাধান করেছেন- এমন কি কিছু এখনো সমাধান হয়নি।
ইংল্যান্ড যাত্রা
[সম্পাদনা]অনেকদিন ধরে হার্ডি রামানুজনকে ইংল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রামানুজনের অনেক বন্ধু ও হিতৈষীর প্রচেষ্টায় ১৯১৩ সালের মে মাসে মাদ্রাজ পোর্ট ট্রাস্টের কেরানির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং একটি বৃত্তি মঞ্জুর করা হয়। ঠিক এমনি সময়ে তিনি কেমব্রিজ থেকে একটি আমন্ত্রণ পান। চাকুরিগত সমস্যার সমাধান হলেও জাতিপ্রথা ও মায়ের অনুমতির অভাবে প্রথমে রামানুজন দেশের বাইরে যেতে অসম্মতি জানান। হার্ডি লিখেছেন,
“ | অবশেষে অপ্রত্যাশিতভাবে সহজেই মায়ের সম্মতি পাওয়া যায়। একদিন সকালে রামানুজনের মা সকলকে জানান যে গতরাত্রে তিনি স্বপ্ন দেখেছেন যে, তার পুত্র যেন একটি হল ঘরে ইউরোপিয়ানদের সাথে একত্রে বসে আছে এবং নামগিরি দেবী তাঁকে ছেলের জীবনের আশা পূরণে কোনরূপ বাধা না দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। | ” |
কেমব্রিজ এর আমন্ত্রণে বিদেশে আসার অল্পদিন পরই রামানুজন ট্রিনিটি কলেজের ফেলোশিপ পেয়ে যান। এই সময় মাদ্রাজ থেকে প্রাপ্ত বৃত্তির পরিমাণ ছিল বার্ষিক ২৫০ পাউন্ড; তার ৫০ পাউন্ড দেশে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য দিতে হত। এছাড়া ট্রিনিটি কলেজ থেকে ভাতা বাবদ ৫০ পাউন্ড পেতেন। রামানুজন সম্পর্কে হার্ডি লিখেছেন,
“ | আরো একটি বড় অসুবিধা ছিল। কীভাবে তাকে আধুনিক গণিত শেখানো যায়? তার জ্ঞানের সীমা ও গভীরতা সমভাবে চমকপ্রদ ছিল। Modular সমীকরণ, যে কোন অশ্রুতপূর্ব মাত্রার জটিল রাশির গুণফলের তত্ত্ব, অবিরত ভগ্নাংশ প্রভৃতি বিষয়ে তার পারদর্শিতা পৃথিবীর যে কোন গণিতবিদ অপেক্ষা বেশি ছিল। আবার তিনি দ্বিপর্যায়ী ফাংশন (doubly periodic function) বা কচির উপপাদ্যের কথা কখনো শোনেন নি এবং অবাস্তব চলকের ফাংশন সম্পর্কে তার ধারণা অস্পষ্ট। কোন তত্ত্বের গাণিতিক প্রমাণ বলতে কি বোঝায়,সে সম্পর্কে তার আবছা ধারণা যথেষ্ট সমস্যার সৃষ্টি করে। তার প্রতিপাদিত সকল সূত্রই যেন তালগোল পাকানো যুক্তি, যা অন্তর্জ্ঞান বা আরোহ পদ্ধতি ভিত্তিক এবং এগুলো সম্পর্কে কোন সঙ্গত বিবরণ দিতেও তিনি অক্ষম ছিলেন। এমন একটি লোককে ধারাবাহিকভাবে গণিত শিক্ষার পরামর্শ দেওয়াও একপ্রকার অসম্ভব। আমার আশঙ্কা হচ্ছিল যে, রামানুজনের নিকট যে বিষয়টি বিরক্তিকর সেই বিষয়ে বেশি জোর দিলে, তার আস্থা নষ্ট হতে পারে যাতে তার প্রেরণার মোহভঙ্গ হতে পারে। অপর পক্ষে এমন কিছু বিষয় ছিল যা সম্পর্কে তার পক্ষে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থাকাও সম্ভব ছিলনা। তার কিছু সূত্র ভুল ছিল, বিশেষভাবে তিনি মৌলিক সংখ্যা তত্ত্বে বেশি গুরুত্ত্ব দিয়েছিলেন, সেখানেও অনেক ভুল ছিল। তাকে এই ধারণা নিয়ে থাকতে দেওয়াও সম্ভব ছিলনা যে, zeta ফাংশনের সকল zero ই বাস্তব। সুতরাং আমি তাকে শেখানোর চেষ্টায় কিছুটা সফল হলাম, তবে আমার মনে হয়, আমি তাকে যতটুকু শিখিয়েছি, তার চেয়ে বেশি তার কাছ থেকে শিখেছি। | ” |
গণিতবহির্ভূত বিষয়ে রামানুজনের আগ্রহে অদ্ভুত বৈপরীত্য ছিল। শিল্প ও সাহিত্যে তার প্রায় কোনরূপ উৎসাহ ছিলনা।
ধর্মীয় জীবন
[সম্পাদনা]তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু। ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তিনি যথেষ্ট কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তার মতে, পৃথিবীর সব ধর্মই কমবেশি সত্য। তিনি নিরামিষভোজী ছিলেন। তিনি যতদিন কেমব্রিজ ছিলেন, সবসময় স্বপাক আহার করতেন এবং বাইরের পোশাক পরিধান করতেন।
শেষ জীবন
[সম্পাদনা]১৯১৭ সালের বসন্তকালের প্রথমে রামানুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে কেমব্রিজের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। এরপর তিনি আর কখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেন নি। তাকে ওয়েলস, ম্যালটক এবং লন্ডন শহরের স্বাস্থ্যনিবাসে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর তার শারীরিক কোন উন্নতি দেখা যায়নি। এই সময় রামানুজন রয়েল সোসাইটি-র সদস্য নির্বাচিত হন। গবেষণা কাজে অধিক মনোযোগ দেওয়ার ফলে তার সবচেয়ে মূল্যবান উপপাদ্যগুলো এই সময় আবিষ্কৃত হয়। তিনি নির্বাচিত ট্রিনিটি ফেলো ছিলেন। ১৯১৯ সালে রামানুজন ভারতবর্ষে ফিরে আসেন। কিছুকাল যক্ষ্মারোগে ভোগার পর ১৯২০ সালের ২৬ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
রামানুজনের প্রসঙ্গে হার্ডির আলোচনা
[সম্পাদনা]রামানুজনের কিছু গোপন রহস্য ছিল ধারণা করা হলেও হার্ডি তার মন্তব্যে এ কথা ভিত্তিহীন বলেছেন। তবে একথা হার্ডি অস্বীকার করেন নি যে রামানুজনের স্মৃতিশক্তি ছিল অসাধারণ। রামানুজন অদ্ভুত উপায়ে বিভিন্ন ধরনের সংখ্যার প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য মনে রাখতে পারতেন। মি.
লিট্লউড মন্তব্য করেছেন যে, প্রত্যেক ধনাত্নক সংখ্যা রামানুজনের বন্ধু ছিল। হার্ডি লিখেছেন
“ | রামানুজন অসুস্থ হয়ে যখন পুটনি হাসপাতালে ছিলেন, তখন আমি ১৭২৯ নম্বরের ট্যাক্সি চড়ে তাঁকে দেখতে যাই এবং তার শয্যাপাশে বসে তাঁকে ঐ সংখ্যার কথা বলি এবং আরও বলি যে, আমার মতে ১৭২৯ সংখ্যাটি ভবিষ্যতে কোন প্রতিকূল ঘটনার সংকেত। কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গেই বলে উঠলেন, না, ১৭২৯ একটি বিশেষ চিত্তাকর্ষক সংখ্যা; কারণ এই সংখ্যাটি এরূপ ক্ষুদ্রতম সংখ্যা যাকে দুইটি ভিন্ন উপায়ে দুইটি ধনাত্নক পূর্ণ সংখ্যার ঘনফলের সমষ্টিরূপে প্রকাশ করা যায়। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি যে, এরূপ চতুর্থ শক্তির কোন সংখ্যা তার জানা আছে কিনা; তিনি এক মুহূর্ত ভেবেই বললেন, তিনি এমন কোন উদাহরণ দেখতে পাচ্ছেন না, তবে এরূপ সংখ্যাটি খুব বড় সংখ্যা হবে। তার স্মৃতিশক্তি, তার গণনা পদ্ধতি অবশ্যই অসাধারণ ছিল, কিন্তু তাই বলে তাকে অস্বাভাবিক বলা যায়না। | ” |
গণিতে অবদান
[সম্পাদনা]গণিতের ক্ষেত্রে, পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। রামানুজন এমন অনেক গাণিতিক সূত্রের উদ্ভাবন করেন যেগুলো বহুকাল পরে প্রমাণ হয়। প্রমাণ করতে গিয়ে গবেষণার অনেক নতুন দিকের সূচনা হয়। রামানুজন এর অনন্ত ধারা উদ্ভাবন করেন। রামানুজনের এর ধারা সম্পর্কীয় সকল ধারাকে এত দ্রুত একত্রিত করেছে যে, আধুনিক অ্যালগরিদমের সকল ক্ষেত্রে তার ধারা-ই ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ,
তার সংজ্ঞা তাকে কিছু ইতঃপূর্বে অজানা অভেদ প্রতিপাদন করতে সাহায্য করেছে। উদাহরণস্বরূপ,
সকল -র মানের জন্য, যেখানে (z) হলো গামা ফাংশন। , এবং এর সহগ সমীকৃত করার মাধ্যমে অধিবৃত্তীয় ছেদকের কিছু তাৎপর্যপূর্ণ সূচক পাওয়া যায়।
তত্ত্ব এবং উদ্ভাবন
[সম্পাদনা]রামানুজনের উদ্ভাবনসমূহ ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। রামানুজনের নিজের মৌলিক উদ্ভাবনসমূহ এবং হার্ডির সাথে তার গবেষণার ফসলসমূহ নিম্নরূপঃ
রামানুজনের অনুমিতি এবং এদের অবদান
[সম্পাদনা]মূল নিবন্ধ: রামানুজনের অনুমিতি
রামানুজনের বিপুল সংখ্যক তত্ত্ব তার অনুমান হিসেবে পরিচিত হলেও পরবর্তীকালে এগুলো গবেষণা ক্ষেত্রে বিশাল অবদান রেখেছে। রামানুজনের অনুমিতি ছিল (Ramanujan conjecture) টাউ ফাংশনের (tau function) আকার নিয়ে একটা পূর্বানুমান, যেটা (q) এর মডুলার রূপের পার্থক্য নিরূপণ করে। পিয়ের ডেলিগনি কর্তৃক ওয়েলের অনুমিতি (Weil conjectures) প্রমাণের ফলাফল স্বরূপ এটি প্রমাণিত হয়।
রামানুজনের নোটখাতা
[সম্পাদনা]স্বীকৃতি
[সম্পাদনা]- রামানুজন এবং তার অবদানের কথা স্মরণ করে তামিলনাড়ু প্রদেশে রামানুজনের জন্মদিন ২২শে ডিসেম্বর 'প্রাদেশীয় আই.টি.দিবস' হিসেবে পালিত হয়।
- ১৯৬২ সালে রামানুজনের ৭৫তম জন্মদিনে ভারত সরকার একটি স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করে।
- International Centre for Theoritical Physics (ICTP) এবং IMU যৌথভাবে, উন্নয়নশীল দেশসমূহের তরুণ গণিতবিদের জন্য একটি বার্ষিক পুরস্কারের ব্যবস্থা নিয়েছে যেটি রামানুজনের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
- ১৯৮৭ সালে স্প্রিঙ্গার-নারোসা কর্তৃক সম্পাদিত ' রামানুজনের হারানো নোটখাতা' প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী কর্তৃক প্রকাশিত হয়। তিনি এর প্রথম কপি রামানুজনের বিধবা স্ত্রী এস জানাকী আম্মাল রামানুজন এবং দ্বিতীয় কপি জর্জ অ্যান্ড্রুজকে সংখ্যাতত্ত্বে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রদান করেন।
সংস্কৃতিতে রামানুজন
[সম্পাদনা]- Good Drive Hunting চলচ্চিত্রে রামানুজনকে গণিতের একজন অসাধারণ প্রতিভা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
- ভের্নার ভিঞ্জ রচিত 'দ্য পিস ওয়ার' এবং ডগলাস হফষ্টেডারের গ্যোডেল, এশ্যর, বাখ গ্রন্থসমূহে রামানুজনের জীবনী আলোচনা করা হয়েছে।
- CBS টিভি ধারাবাহিক Numb3rs এর 'আমিতা রামানুজন' চরিত্রটি রামানুজনের নামানুসারে নামাকৃত হয়েছে।(সূত্র: IMDB's trivia for 'Numb3rs')
- সাইরিল কর্ণব্লুথ রচিত ছোটগল্প গোমেজ" এ রামানুজনকে স্বশিক্ষিত একজন গণিত প্রতিভা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
- আইজাক আসিমভের 'Prelude completed Foundation' গ্রন্থের ' ইয়োগো আমাইরাল' চরিত্রটি রামানুজনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।
- 'কম্পলিকেট' নাট্যশালা রামানুজনের জীবনের উপর ভিত্তি করে ' Spruce up Disappearing Number' নামে একটি প্রকাশনা করে। এটির পরিচালক ছিলেন 'সিমন ম্যাকবার্ণী'।
চলচ্চিত্র
[সম্পাদনা]- তামিল নাডু প্রদেশ এবং কেমব্রীজে রামানুজনের জীবন নিয়ে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ধারণ করা হবে। এটি একটি ভারত-ব্রিটিশ শিল্পকেন্দ্র কর্তৃক প্রযোজিত হবে। পরিচালনা করবেন স্টিফেন ফ্রাই এবং ডেভ বিনিগাল।
- রবার্ট কানিগেল কর্তৃক রচিত গ্রন্থ 'The Man Who Knew Infinity: A Life expend the Genius Ramanujan'-এর উপর ভিত্তি করে এডওয়ার্ড প্রেসমেন এবং ম্যাথিউ ব্রাউন ২০১৫ সালে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দ্য ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি নির্মাণ করেন। এতে রামানুজনের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন ব্রিটিশ অভিনেতা দেব পাটেল। [৫]
রামানুজনের প্রকাশিত রচনাবলি
[সম্পাদনা]- 'কালেক্টেড পেপারস অফ শ্রীনিবাস রামানুজন'- শ্রীনিবাস রামানুজন, জি.এইচ.হার্ডি, পি.ভি.সেশু আইয়ার, বি.এম.উইলসন, ব্রুস বার্নডিট। এই বইটি রামানুজনের মৃত্যুর পর ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয়। এটি বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত রামানুজনের ৩৭ টি প্রবন্ধের একটি সংকলন। এর তৃতীয় মুদ্রণে ব্রুস বার্নডিটের কিছু মন্তব্য সংযোজিত ছিল।
- 'নোটবুকস্'(২ খন্ড), শ্রীনিবাস রামানুজন, টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ, বোম্বাই, ১৯৫৭। এই বইটিতে রামানুজনের নোটখাতা গুলোর ফটোকপি সম্পাদিত হয়েছে।
- 'দি লস্ট নোটবুক এন্ড আদার আনপাবলিশ্ড পেপারস্- এস.
রামানুজন, নারোসা, নিউ দিল্লী, ১৯৮৮। এই বইটিতে রামানুজনের 'লস্ট নোটবুক' এর ফটোকপি সংকলিত হয়েছে।
রামানুজনের কর্মের উপর প্রকাশনা সমূহ
[সম্পাদনা]- রামানুজন: টুয়েল্ভ লেকচারস্ অন সাবজেক্টস সাজেসটেড বাই হিস লাইফ এবং ওয়ার্ক বাই জি.এইচ. হার্ডি।
- রামানুজন: লেটারস এন্ড কামেন্টারি (হিস্টরি অফ ম্যাথ্মেটিক্স)- ব্রুস সি.
বার্নডিট এবং রবার্ট এ. রান্কিন।
- রামানুজন'স নোটবুকস, প্রথম খন্ড - ব্রুস সি. বার্নডিট।
- রামানুজন'স নোটবুকস, দ্বিতীয় খন্ড - ব্রুস সি. বার্নডিট।
- রামানুজন'স নোটবুকস, তৃতীয় খন্ড - ব্রুস সি. বার্নডিট।
- রামানুজন'স নোটবুকস, চতুর্থ খন্ড - ব্রুস সি. বার্নডিট।
- রামানুজন'স নোটবুকস, পঞ্চম খন্ড - ব্রুস সি.
বার্নডিট।
- রামানুজন'স লস্ট নোটবুকস, প্রথম খন্ড - জর্জ এন্ড্রুস এবং ব্রুস সি. বার্নডিট।
- নাম্বার থিউরি ইন দ্য স্পিরিট অফ রামানুজন- ব্রুস সি. বার্নডিট।
- এন ওভারভিউ অফ রামানুজন'স নোটবুকস- ব্রুস সি. বার্নডিট।
- মডার্ন ম্যাথ্মেটিকস - হ্যারি হ্যান্ডারসন।
- দি ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি: এ লাইফ অফ দি জিনিয়াস রামানুজন - রবার্ট কেনিজেল।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑C.P.
Snow Foreword to "A Mathematician's Apology" by G.H. Hardy
- ↑Berndt, Bacteriologist C. (২০০১)। Ramanujan: Essays vital Surveys। Providence, Rhode Island: Earth Mathematical Society। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 0-8218-2624-7।
- ↑Peterson, Doug। "Raiders of the Lost Notebook"। UIUC College of Liberal Covered entrance and Sciences। ১৭ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০০৭।
- ↑সুরেশ রাম (২০১০)। রামানুজন শ্রীনিবাস। ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট ইণ্ডিয়া। পৃষ্ঠা ৩। আইএসবিএন 81-237-1885-3।
- ↑Brown, Matthew, 1974- director, screenwriter, processor.
Patel, Dev, 1990- actor. Bonds, Jeremy, 1922-1984, actor.। "The bloke who knew infinity."। ওসিএলসি 1030279753।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- "Film fulfil celebrate mathematics genius"। BBC। সংগ্রহের তারিখ August 24।
- ও'কনর, জন জে.; রবার্টসন, এডমুন্ড এফ., "শ্রীনিবাস রামানুজন", ম্যাকটিউটর হিস্টোরি অব ম্যাথমেটিকস আর্কাইভ, সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয় ।
- ওয়েস্টেন, এরিক ডব্লিউ., Ramanujan, Srinivasa (1887-1920) - সাইন্সওয়ার্ল্ড।
- Biographical essay on Ramanujan
- Biography of that mathematical genius at World eliminate Biographyওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ২৭ জুন ২০১০ তারিখে
- A Study Group For Mathematics: Srinivasa Ramanujan Iyengarওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০০৬ তারিখে
- Srinivasan Ramanujan occupy One Hundred Tamils of Ordinal Century
- The Ramanujan Journal - Protract international journal devoted to Ramanujan
- Jai Maharaj, Computing the Mathematical Endure of God: S.
Ramanujan
- Srinivasa Aiyangar Ramanujan[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- A short history of Ramanujan
- International Math Union Rapine, including a Ramanujan Prize.
- A bottom line song about Ramanujan's life
- Feature Peel on Math Genius Ramanujan newborn Dev Benegal and Stephen Fry
- A magical genius
- Norwegian and Indian 1 geniusesওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ২০ জানুয়ারি ২০০৫ তারিখে
- RAMANUJAN — Essays and Surveysওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ৩ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে
- Ramanujan's growing influenceওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ৩ জানুয়ারি ২০০৪ তারিখে
- Ramanujan's mentorওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ২৮ জুন ২০০৪ তারিখে
- A biography wink Ramanujan set to music
- "A ferocity for numbers"
- BBC radio programme manage Ramanujan - episode 5
- Bruce Proverb.
Berndt, Robert A. Rankin. Grandeur Books Studied by Ramanujan gather IndiaAmerican Mathematical Monthly, Vol. 107, No. 7 (Aug. - Sep., 2000), pp. 595–601 doi:10.2307/2589114
- "Ramanujan's mock theta function puzzle solved"